বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের জাতীয় কাউন্সিলে বক্তারা বলেন, বর্তমানে দেশে রাজনৈতিক সংকট চলছে। রাজনৈতিকদলগুলোর প্রতিশোধপরায়ণ ও হিংসাত্মক রাজনীতির ফলে পরস্পর হিংসা-বিদ্বেষ বাড়ছে। বাড়ছে খুন-গুম-সন্ত্রাস। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উর্ধ্বগতি, সিন্ডিকেট ব্যবসা, দলীয়করণ, আধিপত্যবাদী ও স্বজনপ্রীতির রাজনৈতিক চরিত্রে বলি হচ্ছে সাধারণ জনগণ। রাজনীতির দোলাচলের এ খেলায় সুবিধা নিয়ে অতিউৎসাহী কিছু সরকারি কর্মকর্তা ও প্রশাসনের পদস্থ ব্যক্তিবর্গ বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে। ফলশ্রুতিতে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। যা আমাদের দেশের জন্য কলঙ্কময়। এমতাবস্থায় দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে ও বহির্বিশ্বে দেশের সম্মান সুদৃঢ় করতে রাজনৈতিকদলগুলোর মধ্যে পরস্পর সু-সম্পর্ক ও সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টির বিকল্প নাই।
বক্তারা বলেন, দেশে অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য মেগা প্রকল্প হাতে নেয়ার কথা বলা হলেও বরং একশ্রেণির লোকের ব্যক্তিগত উন্নতি লক্ষ্যণীয়। জনগণের ভ্যাট ট্যাক্সের টাকা পেশীশক্তি নির্ভর রাজনৈতিক শক্তি ও প্রজাতন্ত্রের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের উদরপূর্তি হচ্ছে। মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনার কথা বলে একটি গোষ্ঠী সবকিছু লুঠে নিচ্ছে। যারা দেশের জনগণের অর্থ আত্মসাৎ করে বিদেশে পাচার করে কানাডার বেগম পাড়া সহ বিভিন্ন দেশে স্থায়ীভাবে থাকার বন্দোবস্ত করছে, দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নত না করে বিদেশে তাদের সন্তানদের পড়াশোনা করাচ্ছে ও স্বাস্থ্য খাতকে দুর্নীতির আতুঁড়ঘরে বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে জনগণকে দেশপ্রেমের পাঠ শেখাচ্ছে তারা জাতীয় বেঈমান। দুর্নীতির মাধ্যমে টাকা পাচার করে অর্থনীতিকে ধ্বংসকারীরা দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের শত্রু। তারা সুযোগ পেলে সম্পূর্ণ দেশটা বিক্রি করে দিবে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য যেমন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও দেশপ্রেম প্রয়োজন, তেমনি নৈতিক আদর্শের রাজনৈতিক দলের রাজনীতির চর্চা প্রয়োজন।
নির্বাচন সম্পর্কে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট নেতৃবৃন্দ বলেন, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তথা সকল দলের সমান অংশগ্রহণের সুযোগ না হলে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। অথচ দেশে প্রহসনের নির্বাচন চলছে। জনগণের ভোট-ভাতের অধিকার হরণ করা হচ্ছে। ২০১৪ সাল থেকে দেশে কোন সুষ্ঠু নির্বাচন হয় নি। দলদাস নির্বাচন কমিশন পেশীশক্তি নির্ভর ভোট ডাকাতির নির্বাচন ব্যতীত কিছুই দিতে পারে নি। বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট প্রস্তাবিত ৯দফা অনুযায়ী স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনই পারবে সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে। প্রতিহিংসা মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে আগামী নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জনগণ নানামুখী কারণে এমনেও ক্ষুদ্ধ, নির্বাচন কারচুপির চিন্তা করে কেউ ক্ষমতায় থাকার বা যাওয়ার চেষ্টা করলে জনগণ রাজপথে এর জবাব দিবে।
বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের জাতীয় কাউন্সিল আজ ৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ইংরেজি শনিবার সকাল ৯ টায় ঢাকা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে অনুষ্ঠিত হয়। ফ্রন্টের চেয়ারম্যান জননেতা আল্লামা এমএ মান্নানের সভাপতিত্বে এতে স্বাগত বক্তৃতা দেন মহাসচিব জননেতা আল্লামা এম এ মতিন। কাউন্সিলের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ স.উ.ম আবদুস সামাদের সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন-বক্তব্য রাখেন প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মসিহুদ্দৌলা, ড. আল্লামা আফজাল হোসাইন, আলহাজ্ব সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী হারুন, অধ্যক্ষ আহমদ হোসাইন আলকাদেরী, শাইখ আবু সুফিয়ান খান আবেদী আলকাদেরী, আল্লাৃমা ছাদেকুর রহমান হাশেমী, কাজী মামুনুর রশিদ,..
অধ্যক্ষ আবু জাফর মুঈনুদ্দীন, সৈয়দ মুজাফফর আহমদ মুজাদ্দেদী, শাইখুল হাদীস হাফেজ আশরাফুজ্জামান আলকাদেরী, মাওলানা আবুল আসাদ মুহাম্মদ জুবায়ের রেজভী, কাজী সোলাইমান চৌধুরী, কাজী জসিম উদ্দিন সিদ্দিকী, কাজী মুহাম্মদ ইসলাম উদ্দিন দুলাল, মুফতি মাহমুদুল হাসান আলকাদেরী, এডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, অধ্যাপক জালাল উদ্দীন আল আজহারী, সৈয়দ মুহাম্মদ হোসেন, গোলামুর রহমান আশরাফ শাহ্, অধ্যক্ষ মুহাম্মদ তৈয়ব আলী, মাওলানা রেজাউল করীম তালুকদার, ইঞ্জিনিয়ার নুর হোসেন, অধ্যাপক মনসুর দৌলতী, গোলাম মাহমুদ ভূঁইয়া মানিক, মাসুম বিল্লাহ মিয়াজী, মাওলানা এম এ মান্নান, মাওলানা মন্জুর আলম, অধ্যক্ষ সালাহ উদ্দিন মোহাম্মদ খালেদ, মুফতি মহিউদ্দিন হামিদী, মাওলানা ওবায়দুল্লাহ কদম রসুলি, মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল নবী, মোহাম্মদ আশরাফ শাহ্, অধ্যাপক নুরুল আলম, জাহিদুল ইসলাম, এম এ মুস্তফা হেজাজী, মাওলানা মুহিত হাসানী, অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম, মাওলানা জালাল উদ্দীন আহমদ আঁখঞ্জী, মাওলানা সোলাইমান খান রাব্বানী, সাইফুদ্দিন আহমদ, অধ্যক্ষ গোলাম সরওয়ার, অধ্যক্ষ জালাল উদ্দীন আলকাদেরী, অধ্যাপক রিদওয়ান আশরাফী, মুফতি হাফেজ গোলাম কিবরীয়া, সৈয়দ হাসান আল আজহারী, আবদুল মোস্তফা রাহীম আল আজহারী প্রমূখ।
প্রথম অধিবেশন শেষে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের বিভিন্ন জেলা প্রতিনিধির অংশগ্রহণে দুপুরে এক বিরাট বর্ণাঢ্য মিছিল নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে এসে শেষ হয়।