মুহাম্মদ দেলোয়ার হোসাইন, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা।
১৯ বছর পেরুনো এই তরুণের নেশাই হল বিভিন্নজনের ফেসবুক একাউন্টের অবিকল নকল বানানো। এরপরই চলতো প্রতারণা। নকল ফেসবুক একাউন্টের জন্য তিনি আবার টার্গেট করতেন সহপাঠী ও প্রতিবেশীসহ ঘনিষ্ঠজনদেরই। তাদের নাম ও ছবি ব্যবহার করে বিপুল পরিমাণ ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা চালিয়ে আসছিলেন এসএসসির গণ্ডি পেরুনো এই তরুণ।
বুধবার (২১ জুলাই) ভোরে শেষ পর্যন্ত পুলিশের জালে ধরা পড়লেন তিনি। নাম তার মোহাম্মদ শাহেদ ওরফে ফারুক ওরফে তাসিন। বাড়ি চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সরফভাটা এলাকায়। দুবাইপ্রবাসী নাজের আহমদের একমাত্র সন্তান শাহেদ।
জানা গেছে, রাঙ্গুনিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আনোয়ার হোসেন শামীমের নেতৃত্বে রাঙ্গুনিয়া থানা পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সরফভাটার নিজ বাড়ি থেকে শাহেদকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারের পরই শাহেদের মোবাইল ঘেঁটে দেখা যায়, সেখানে তার পরিচিত অনেকেরই ‘ক্লোন’ করা ফেসবুক আইডি লগইন অবস্থায় রয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছে কয়েকজন নারী ও শাহেদের কয়েকজন সহপাঠীর একাউন্টও।
পুলিশ বলছে, কয়েকজন নারীর নামে খোলা ক্লোন করা আইডি থেকে নিয়মিত নোংরা, অশালীন, অরুচিকর ছবি পোস্ট করতেন শাহেদ। আবার এসব আইডি থেকে অন্য অনেক নারীর সাথে অশালীন ভাষায় চ্যাটও করা হতো। পুলিশের পর্যবেক্ষণে মিলেছে ব্ল্যাকমেইলিংয়ের প্রমাণও।
জানা গেছে, মাসখানেক আগে শাহেদের হাতে ব্ল্যাকমেইলিংয়ের শিকার হওয়া এক ছাত্রী পুলিশ সদর দফতর পরিচালিত ‘পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন’ (পিসিএসডব্লিউ) ফেসবুক পেজে একটি অভিযোগ দেন। তখনও পর্যন্ত অজানা ওই প্রতারক দাবি করা টাকা পরিশোধ না করা হলে ওই ছাত্রী এবং তার বন্ধুর ছবিকে নগ্ন ছবিতে রূপান্তর করে ফেসবুকে ছেড়ে দেবেন বলে হুমকি দিতে থাকেন। এমন পরিস্থিতির শিকার হয়ে ওই ছাত্রী আত্মহত্যার পরিকল্পনাও করেন। শেষপর্যন্ত তিনি পুলিশের সাইবার সাপোর্টে অভিযোগ দেন।
Din Mohammed Convention Hall
পরে মঙ্গলবার (২০ জুলাই) রাত পৌনে ১২টায় ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর এক ছেলে সহপাঠী বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রাঙ্গুনিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এদিকে গ্রেপ্তার হওয়ার পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শাহেদ জানান, এর আগেও বিপুলসংখ্যক ক্লোন ফেসবুক আইডি তৈরি করে সেগুলো দিয়ে প্রতারণা করার পর ওইসব একাউন্ট স্থায়ীভাবে মুছে ফেলেছেন তিনি।